বাংলাদেশের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন এবং এর আলোকে পাঠ্যপুস্তকসমূহ ও অন্যান্য শিখন-শেখানো সামগ্রী উন্নয়ন ও প্রকাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড যা এনসিটিবি নামে বহূল পরিচিত।এটি বাংলাদেশের প্রাক-প্রাথমিক হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, উন্নয়ন এবং মুদ্রণ করে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীর হাতে পৌছে দেয়।পুস্তক প্রকাশনার সংখ্যা বিবেচনায় এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকাশনা সংস্থা। এটি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর প্রধান কার্যালয় ৬৯-৭০ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-তে অবস্থিত।
এনসিটিবি’র ইতিহাস:
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পাঠ্যবই তৈরির উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে “পূর্ববঙ্গ স্কুল টেকস্টবুক কমিটি” গঠিত হয়। পরবর্তিতে ১৯৫৪ সালে টেকস্ট বুক আইন পাশ হয় এবং সেই আইন অনুযায়ী “স্কুল টেকস্টবুক বোর্ড” নামে একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৬, ১৯৬১ এবং ১৯৬৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্নভাবে পুনর্গঠিত হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত “বাংলাদেশ স্কুল টেকস্টবুক বোর্ড” কর্তৃক ১ম থেকে ১০ম শ্রেণির সকল বিষয়ের সকল পাঠ্যপুস্তক নবজাত রাষ্ট্রের প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন, পরিমার্জন ও পুনর্লিখন কাজ করে। ১৯৭৮ সাল থেকে শিক্ষাক্রমের উপর ভিত্তি করে পাঠপুস্তক প্রণয়নের কাজ শূরু করে। ১৯৮১ সালে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের জন্য “জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন কেন্দ্র (এনসিডিসি)” নামে পৃথক একটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষাক্রম উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজে সমন্বয় সাধনের জন্য পরবর্তিতে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ স্কুল টেকস্টবুক বোর্ড এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন কেন্দ্রকে একীভূত করণের মাধ্যমে “জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড” গঠিত হয়।
প্রশাসনিক কাঠামো:
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর প্রধান হলেন চেয়ারম্যান। প্রধান ৪টি উইং হলো- শিক্ষাক্রম, প্রাথমিক শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক ও অর্থ উইং। প্রতিটি উইং এর প্রধান হলেন একজন সদস্য। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীন প্রশাসনিক কাজে সহায়তার জন্য রয়েছে একজন সচিব।
এনসিটিবি পরিচালিত হয় বোর্ডের মাধ্যমে। চেয়ারম্যান ও ৪ উইং এর ৪জন সদস্যের সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত। বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন বোর্ডের সচিব।
National Curriculum and Textbook Board Ordinance,1983 এর অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী বোর্ডের কার্যাবলী :
এনসিটিবি কর্তৃক ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে বিতরণকৃত পাঠ্যপুস্তকের বিবরণী:
ক্রমিক |
স্তর |
পুস্তক সংখ্যা |
১ |
প্রাক-প্রাথমিক |
৬৫,৭৭,১৫৪ |
২ |
প্রাথমিক |
১০,৮৭,১৯,৯৯৭ |
৩ |
মাধ্যমিক ও এসএসসি ভোকেশনাল |
১৬,৫২,৭৬,২০৯ |
৪ |
ইবতেদায়ী |
১,৯২,৫৫,৬১৫ |
৫ |
দাখিল ও দাখিল ভোকেশনাল |
৩,৩৯,৩৩,৭৯৭ |
মোট |
৩৩,৩৭,৬২,৭৭২ |
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চলমান কার্যক্রম:
জনবল কাঠামো:
প্রথম শ্রেণি: ৭৭
দ্বিতীয় শ্রেণি: ২৯
তৃতীয় শ্রেণি: ১০৯
চতুর্থ শ্রেণি: ৯৬
প্রধান কার্যালয়: ১২ তলা ও ৭ তলা বিশিষ্ট ২টি ভবন
পাঠ্যপুস্তক ভবন, ৬৯-৭০ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা: ১০০০
গোডাউন: ১. ২৬৮ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, তেজগাঁও, ঢাকা
২. মরকুন, টঙ্গি, গাজীপুর
স্টাফ কোয়ার্টার:১. ৩৮ রেনকিং স্ট্রিট, ওয়ারী, ঢাকা (৩টি ৫তলা ভবন ও ১টি ২তলা ভবন)
২. ২৬৮ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, তেজগাঁও, ঢাকা (১টি ৪তলা ভবন)
৩. মরকুন, টঙ্গি, গাজীপুর ( ১টি ৫তলা ভবন)